গত এক সপ্তাহ আগে থেকে মাহফিলের প্রচারনা শুরু করলেও গত রাতে হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেট খেলার প্রচারণা শুরু করে একই তারিখের। উক্ত খেলায় পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলবেন বলে প্রচার করছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আশরাফুল। একদিকে প্রিয় বক্তা মাওলানা হাফিজুর রহ মানের মাহফিল প্রেমী অন্যদিকে প্রিয় খেলোয়াড় আশরাফুলের উপস্থিতিতে ক্রিকেট প্রেমীদের আনন্দ উচ্ছাস দেখা দিলেও একই দিনে হওয়ায় উক্তেজনা সৃষ্টি দেখা দিচ্ছে। যদিও এখনো পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাহ ফিলের অনুমোদন পায়নি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খেলা আয়োজকরা প্রশাসনের লিখিত অনুমোদন পেয়েছে বলে কর্তৃ পক্ষ জানান।
জানা জানা যায় চরমোনাই পীরের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছরের ন্যায় হাটহাজারী সরকারী মডেল পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করেছে। এই সংগঠনটি গত বছরও একই মাঠের মাহফিল করতে অনুমতি পায়নি প্রশাসনের। অদৃশ্য বাধার কারণে মাহফিল করতে না পারায় স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে মাহফিলের কার্যক্রম শেষ করে। এ বছর দুই মাস আগে থেকে মাহফিলের তারিখ নির্ধারণ করে প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অনুমতি চেয়েও অনুমতি পায়নি তারা। তারপরেও তারা ব্যানার পোস্টার লিফলেট বিতরণসহ হাটহাজারী উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী উপজেলায় সিএনজি যোগে বিভিন্ন মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছে।
কিন্তু গতকাল রাতে হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক আইডিতে জাতীয় দলের খেলোয়াড় সাবেক অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম একই দিনে গড়দুয়ারা ইউপি সদস্য ও ক্রীড়া সংগঠক মোহাম্মদ এরশাদ আলীর পৃষ্ঠপোষ কতায় হাটহাজারী মাঠে টি-টেন পরিবার কর্তৃপক্ষের আয়োজিত ফাইনাল খেলায় গড়দুয়ারা আলোকন সংঘের পক্ষ থেকে খেলবে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালাচ্ছে। একদিকে ধর্মীয় মাহফিল প্রেমীদের অন্যদিকে খেলোয়ার প্রেমীদের আনন্দ উচ্ছ্বাসের মাঝে দেখা দিয়েছে টানটান উত্তেজনা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটবে বলে সচেতন ব্যক্তি মহল মন্তব্য করেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের অধ্যুষিত এলাকা হাটহাজারী মাদ্রাসার সহ আশপাশের ধর্মভীরু লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ও বিভাজন দেখা দিয়েছে। হাটহাজারী ক্রিকেট টি-টেন টুর্নামেন্টের আহবায়ক মোঃ মিরাজ শিকদার জানান আমাদের এ খেলাটি দ্বিতীয় আসরের ফাইনাল খেলা। এটি করোনা ভাইরাসের অনেক আগে থেকেই আমাদের খেলাটি শুরু হয়েছিল। লকডাউন এর কারণে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী খেলা বন্ধ ছিল। কিন্তু ২৩ তারিখের ফাইনাল খেলাটি অনেক আগে থেকেই নির্ধারণ করা ছিল। তিনি আরো বলেন, প্রশাসন ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে লিখিত অনুমোদন নিয়েছি।
একজন জাতীয় দলের খেলোয়াড় আশরাফুল ইসলাম ভাই ২৩ তারিখ খেলবে বলে অনেক আগেই তারিখ নির্ধা রণ করে রেখেছি। এখন মাহফিলের তারিখ দিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি করছে সে বিষয়ে আমরা অবগত নয়। উপ জেলা প্রশাসন যে ভাবে বলবে আমরা সে হিসেবে কাজ করবো। শিডিউলের বাইরে টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষের কিছু করার সুযোগ নেই। এদিকে মাহফিল কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা মতিউল্লাহ নুরী জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করেছি কিন্তু উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব শীলদের সাথে মাহফিল নিয়ে বৈঠক হয়েছে কিছু শর্তসাপেক্ষে মৌখিক অনুমতি পেলেও এখনো পরিপূর্ণ লিখিত অনুমোদন পায়নি।
দুর্ভাগ্যের বিষয় দু’মাস আগের নির্ধারিত মাহফিলের তারিখকে কেন্দ্র করে মাহফিল প্রেমীদের মধ্যে ক্রিকেট প্রেমীদের সাথে একটি সংঘর্ষের বিভাজন সৃষ্টি করছে তৃতীয় পক্ষ। যে কোনভাবে প্রশাসনের শর্তসাপেক্ষে এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুমোদনের বিষয়ে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, মাহফিলের বিষয়ে অনুমতি দেয়ার আমি কেউ নয়। ওরা জেলা প্রশাসকের অফিসে আবেদন করবে, অনুমতি পেলে মাহফিল করবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন জানান, মাহফিল আর খেলা একই দিনে হওয়ায় আমাদের করার কিছু নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশ দিবে সে হিসেবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মো.সাহাবুদ্দীন সাইফ / দৈনিক সংবাদপত্র