বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ধর্ষনে জন্ম নেয়া নবজাতক শিশুকে কোলে নিয়ে থানায় হাজির হয়েছেন এক ধর্ষিতা কিশোরী নারী। তবে গত দশ মাস আগে ধর্ষনের শিকার হলেও গ্রাম্য প্রভাবশালীদের ভয়ে আইনের আশ্রয়ও নিতে পারেননি ওই ধর্ষিতার দরিদ্র পরিবার। অবেশেষে প্রভাবশালীদের ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সোমবার দুুপুরে নবজাতক শিশুকে নিয়ে ধুনট থানায় হাজির হন ওই ধর্ষিতা কিশোরী ও তার মা।
তাদের মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে তাৎক্ষনিক মামলা নিয়েছেন ধুনট থানার ওসি ইসমাইল হোসেন। জানা যায়, গত ১৫ মে উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ি পাইকারপাড়া এলাকার জনৈক এক ব্যক্তির কিশোরী মেয়েকে (১৬) তার নিজ বাড়িতে জোরপূর্বক ধর্ষন করে প্রতিবেশি ফজলু মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান (১৯)। এরপর ভয়ভীতি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরী মেয়েকে আরো কয়েক দফা ধর্ষন করে মেহেদী হাসান। একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তসত্বা হলে পড়লে ওই ধর্ষিতার পরিবার নিমগাছী ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে বিচারের দাবি করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও কোন বিচার পায়নি তারা।
এমনকি প্রভাবশালীদের ভয়ে আইনের আশ্রয়ও নিতে দেওয়া হয়নি ওই ধর্ষিতার পরিবারকে । এঅবস্থায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরী তার বাড়িতে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এদিকে কিশোরী কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে নিরুপায় হয়ে সোমবার দুপুরে নবজাতক কন্যা সন্তান ও ধর্ষিতা কিশোরি তার মাকে নিয়ে বিচারের দাবিতে থানায় হাজির হন। ওই ধর্ষিতা নারীর মা বলেন, ধর্ষনের ঘটনা জানাজানি হলে আমরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রাম্য মাতব্বরদের কাছে বিচার দেই। কিন্তু তারা দীর্ঘদিনেও কোন বিচার করে দিতে পারেনি। এমনকি কিছু মাতব্বর আমাদের ভয়ভীতিও দেখিয়েছেন।
তবে নিমগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহার আলী পাইকার বলেন, বাচ্চা জন্ম হওয়ার দুইদিন আগে ধর্ষনের ঘটনা জানতে পেরেছি। তাই তাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন এ প্রতিবেদক-কে বলেন, ধর্ষিতা কিশোরী কন্যা সন্তান প্রসবের ঘটনায় তিনজনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছে এবং ধর্ষক যুবককে গ্রেফতার অভিযান অব্যহত আছে, এছাড়া ধর্ষিতা নারী ও নবজাতকের চিকিৎসা সহ সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মিজান / দৈনিক সংবাদপত্র