বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার হাপুনিয়া গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা চালানোর অভিযোগ স্বামী বিরুদ্ধে। আগুনে দগ্ধ গৃহবধূর নাম অঞ্জলী খাতুন (১৯)। বৃহস্পতিবার সকালে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। আগুনে তাঁর শরীরের পয়ত্রিশ শতাংশ পুড়েছে।
অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের হাপুনিয়া গ্রামের উজ্জল হোসেনের মেয়ে অঞ্জলী খাতুন। বিগত একবছর আগে পাশ^বর্তী শাজাহানপুর উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের বাবলু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ বুলবুল মিয়ার (২৫) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর কিছুদিন ভালোই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। তবে সম্প্রতি যৌতুকের টাকা পরিশোধ করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে টাকা ও জিনিসপত্র দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা দ্রুত পরিশোধে চাপ দেয় পাষান্ড স্বামী ও তার শশুর বাড়ীর লোকজন।
কিন্তু যৌতুক লোভী স্বামীর দাবি পুরণে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায়ই অঞ্জলী খাতুনের উপর শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন চালাতো। এর একপর্যায়ে অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় এক মাস পূর্বে স্বামীর বাড়ী থেকে বাবার বাড়ীতে আসে। অপর দিকে গত ১০ই মার্চ বুধবার দুপুরের দিকে বুলবুল মিয়া উপজেলার হাপুনিয়া গ্রামে শ্বশুড় বাড়ীতে এলে পূর্বের বিষয়গুলো নিয়ে তাদের স্বামীর-স্ত্রীর মধ্যে কথাকাটি শুরু হয়। এ সময় বাড়ীতে পরিবারের অন্যরা কেউ ছিলেন না। এই সুযোগে যৌতুক লোভী পাষান্ড স্বামী একটি শয়ন কক্ষে তার স্ত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে দরজা-জানালা আটকে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ এ প্রতিবেদক-কে বলেন, খবর পেয়ে আমিসহ শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাসপাতালে গিয়ে অগ্নি দগ্ধ গৃহবধূ ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই ঘটনার রহস্য উম্মোচিত হবে বলে আমরা আশা করি।
জিএম মিজান / দৈনিক সংবাদপত্র