বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে বামপন্থিদের নেতৃত্বে একটা সৎ রাজনীতির আদর্শবাদীর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা উপর থেকে হবে না, নিচের থেকে ঘরে ঘরে যেয়ে মানুষকে তৈরি করে ফেলতে হবে। সেটার জন্য রাজনৈতিক দল, গনসংগঠন, আন্দোলন, সংগ্রাম, ১৬ কোটি মানুষ ৯৯ ভাগ শোষিত, বঞ্চিত একভাগ শোষক লুটেরার বিরুদ্ধে আমাদের আবার বিদ্রোহ করতে হবে। ২০ বছরে পাকিস্তান বাঙালীর সম্পদ বিদেশে যতটা না পাচার করেছে গত ১০ বছরে ১০ গুন সম্পদ আমাদের দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করা যাবে না এই কথা বলে আমরা অস্ত্র তুলে ধরেছিলাম। সেইটা যদি ন্যায় সঙ্গত হয়ে থাকে আজকে যারা বাংলার সম্পদ বিদেশে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে সেই এক শতাংশ লুটেরা ধনিক তাদের দালালরা তাদের বিরুদ্ধেও ন্যায় সঙ্গত, যুক্তিসংগত লড়াই, বিদ্রোহ সামনে। বৃহষ্পতিবার বিকালে বাগেরহাট শহরের সাংষ্কৃতিক ফাউন্ডেশনের এসি লাহা মিলনায়তনে বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির বাগেরহাটে২দিন ব্যাপী খুলনা বিভাগীয় যুব কমিউনিষ্ট ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশকে রক্ষা করতে হলে যারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে প্রায় ৫০টা বছর দেশকে পরিচালনা করেছে তাদের হাতে দেশের ভবিষ্যত নিরাপদ নয়, এটা প্রমাণিত। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন আমরা একটা গান গাইতাম একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি, একটি মূখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি। আমি নিজে মুক্তিযুদ্ধে ছিলাম। লড়াইয়ের পর মুক্তাঞ্চল গঠন করে আমাদের স্বাধীন প্রশাসন (এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন) প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। সেখানে কোন ঘুষ, দূর্নীতি ছিল না। সেখানে কোন নারী ধর্ষণ, নারী নির্যাতন হতো না। সেখানে চুরি চামারী, বাটপারি, ডাকাতি হতো না। সেই মুক্তাঞ্চলে আমরা স্বপ্ন দেখতাম দেশ স্বাধীন হলে সারাদেশে একটা সুন্দর ফুলের সাজানো বাগান আমরা প্রতিষ্ঠা করব। সেই সুন্দর ফুলের বাগানের স্বপ্ন তারা ধ্বংস করে দিয়ে সেই ফুলের বাগানের বদলে দেশে ক্যাসিনোর বাগান করেছে। দেশকে দুরাচারের অরণ্যে পরিণত করেছে। তাদের হাতে ভবিষ্যত ছেড়ে দেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, সমাজে নীতি নৈতিকতার ধ্বস নেমেছে। অন্য সবকিছু হয়ত পূননির্মান করা যায় কিন্তু নীতি নৈতিকতা এক প্রজন্ম দুই প্রজন্মে পূননির্মান করা যায় না। এক কথায় বলা যায় সর্বাঙ্গে ব্যাথা ওষুধ দেব কোথায়? এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি। ইতিমধ্যে দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে দেশ ধ্বংসের দিকে চলে যাবে, আমাদের অস্তিত্ববিলীন হয়ে যাবে। দেশকে রক্ষা করতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে বামপন্থিদের নেতৃত্বে একটা সৎ রাজনীতির আদর্শবাদীর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা উপর থেকে হবে না, নিচের থেকে ঘরে ঘরে যেয়ে মানুষকে তৈরি করে ফেলতে হবে। সেটার জন্য রাজনৈতিক দল, গনসংগঠন, আন্দোলন, সংগ্রাম, ১৬ কোটি মানুষ ৯৯ ভাগ শোষিত, বঞ্চিত একভাগ শোষক লুটেরার বিরুদ্ধে আমাদের আবার বিদ্রোহ করতে হবে। ২০ বছরে পাকিস্তান বাঙালীর সম্পদ বিদেশে যতটা না পাচার করেছে গত ১০ বছরে তার ১০ গুন সম্পদ আমাদের দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করা যাবে না এই কথা বলে আমরা অস্ত্র তুলে ধরেছিলাম। সেইটা যদি ন্যায় সঙ্গত হয়ে থাকে আজকে যারা বাংলার সম্পদ বিদেশে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে সেই এক শতাংশ লুটেরা ধনিক তাদের দালালরা তাদের বিরুদ্ধেও ন্যায় সঙ্গত, যুক্তিসংগত লড়াই, বিদ্রোহ সামনে। সমসাময়িক এসব ঘটনাবলিকে কেউ অস্বীকার করতে পারেনা। সেজন্য আমাদের সমাজের মানুষদের একটা বিশুদ্ধ জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। সেজন্য মানুষের উপর মানুষের শোষণকে বন্ধ করে একটা সাম্যের সমাজ, একটা ইনসাফের সমাজ গড়তে নতুন প্রজন্মের যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। এটা করা গেলে কমিউনিষ্ট পার্টির আয়োজনে অনুষ্ঠিত যুব কমিউনিষ্ট ক্যাম্প সফল হবে বলে মনে করেন পার্টির নেতা।
কমিউনিষ্ট পার্টির বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডভোকেট তুষার কান্তি বসুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় কমিউনিষ্ট যুব ক্যাম্পে আরও বক্তব্য দেন পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স, রতন সেন পাবলিক লাইব্রেরীর সভাপতি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুজিবর রহমান .বাগেরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফররুখ হাসান জুয়েল। আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগীয় যুব কমিউনিষ্ট ক্যাম্প শেষ হবে। এই ক্যাম্পে খুলনা বিভাগের পাঁচ জেলার শতাধিক তরুণ অংশ গ্রহণ করছে। দুদিনের এই যুব ক্যাম্পে অংশ নেয়া তরুণদের দলের নানা সাংগঠনিক প্রশিক্ষণ দেবেন পার্টির নেতারা।
মাসুম হাওলাদার / দৈনিক সংবাদপত্র