মনসুর আহম্মেদ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আরাজী ঝারগাঁও ভেলাজান এলাকার একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৯নং রায়পুর ইউনিয়ন প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষার আলোয় আলোকিত মানুষ গড়তে রয়েছে অাবাশিক- অনাবাসিক একটি বিদ্যালয়।
দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বিদ্যালয়টি এলাকার প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে শিক্ষাসহ নানা ধরনের সেবা দিয়ে আসছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর প্রত্যাশা বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির আওতায় আনবে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রায় ১২ বছর ধরে সেবা দিয়ে অাসচ্ছে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালক আমিরুল ইসলাম ।
এটি এ উপজেলার একমাত্র সুবিধাবঞ্চিতদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুরুতেই ১. একর ১০ শতাংশে জমিতে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১ টি অফিস ৭টি শ্রেণী কক্ষ রুমবিশিষ্ট টিনশেড পাকা ভবন নির্মাণ করা হয় ।
শ্রেনী ৭ টি কক্ষতে পাঠদান ও একটি কক্ষে রয়েছে বিদ্যালয়ের অফিস,পাঠদানের কক্ষগুলোতে চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।

বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে একটি মাঠ। রয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া জন্য নিজস্ব গাড়ির ব্যবস্থা।
এছারাও রয়েছে দুপুরের নাশতা, বই, খাতা, কলম, স্কুলড্রেস বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে সরবরাহ করে থাকে।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের ৪২৯ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে ৩১ জন ও অন্যান্য কর্মচারী রয়েছে ১৩জন্য যাদের সার্বিক খরচ বহন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও এতিম দুস্থ ৫০ জন্য প্রতিবন্ধী জন্য অাবাশিক- অনাবাসিক ও পুনর্বাসন করা হচ্ছে এবং দিনই ও কুরাঅান শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
প্রামিক চিকিৎসা জন্য একটি স্থাতসেবা কেন্দ্রেও রইছে একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র শিক্ষা থীদের মাঝে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্হা দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানতে ২০১৬ থেকে ২০১৯ প্রযন্ত বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও জেলার সফল ও শেষ্ঠো প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০১৯ সাল প্রযন্ত পি এস সি ও জি এস সি পরিক্ষায় কৃতকার্যে সাথে ফলাফল অর্জন করেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
কথা হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী রাফি সাথে আামাদের যাওয়া অাসার জন্য গাড়ীর সমস্য হয়, গাড়ী ব্যবস্হা না থাকা অামি ক্লাস মিস করি।
কথা হয় জরিনা বেগম তিনি বলেন, জন্ম থেকেই আমার দুই মেয়ে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী।
আমি আমার হতভাগ্য মেয়ে দুটিকে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্ত এই বিদ্যালয়টি আমার সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়েছে। আমি এর প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি ও ৯নং রায়পুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃনূরুল ইসলাম বলেন, মূলত সুবিধাবঞ্চিতদের কথা বিবেচনা করেই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সে লক্ষ্যে আমরা যথাসাধ্য প্রচেষ্টা অব্যহত রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি সরকার আমাদের এই উদ্যোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির আওতায় আনবে।
বিদ্যালয়টির পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সুবিধাবঞ্চিতদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়তে নিরন্তর প্রচেষ্টা করে আসছি। এখন বিদ্যালয়টি শুধু শিক্ষাই নয়, নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। আমারা সরকারের পক্ষ থেকে এমপিওভুক্তির সুবিধাটুকু পেলেই পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারব।
মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক, বলেন একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মানবিক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এলাকার সবাই সার্বিক সহায়তা করেছেন। শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তাদের দায়িত্ব কর্তব্য পালন করছেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ডাঃ কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র সরকার কাছে ভালো রিপোর্ট দিয়েছি,আমরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের সহায়তায় আশ্বাস দিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে এই বিদ্যালয়ের ব্যাপারে আলাদা দৃষ্টি থাকবে। আশা করি বিদ্যলয়টি প্রতিবন্ধীদের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল-মামুন মুঠোফোনে বলেন, একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির আওতায় আনার জন্য সমাজসেবা অফিসা সহ অমরা একটি ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়েছি। নিঃসন্দেহে এটি একটি সেবামূলক মহতী উদ্যোগ। সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়টির ব্যাপারে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।
উল্লেখ যে একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ঠাকুরগাঁও ৫০ বি জি বি সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ হোসেন এতিম দুস্থ শিক্ষাথীদের জন্য অাবাসিক ভবন ও মজিদ নির্মাণ করেছেন এছাড়াও বিদ্যালয়টি তিন উপজেলার ও ১৫ ইউনিয়নের প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষার আলোয় আলোকিত মানুষ গড়তে কাজ করে যাচ্ছে।
এ পর্যন্ত ২০০৮ থেকে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার অালম, ঠাকুরগাঁও ১অাসনের স্থানীয় এমপি রমেশ চন্দ সেন, বিভিন্ন নেতৃবৃন্দসহ একাধিক জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারগন, ও জেলা সমাজসেবা উপপরিচালকগন, ও ৩০ বি জি বি ৫০ বি জি বি সেক্টর কমান্ডার অধিনায়কগন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রানালয়ের কর্ম কর্তাগন এছাড়াও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীগন পরিদর্শন করেছেন।।