বগুড়া প্রতিনিধিঃ ঢাকা গাজীপুর থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দাড়িদহে ভাড়া বাসাতে ফিরেছিলেন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা। কিন্তু বিধি-বাম শারীরিক অবস্থা ক্রমশই যখন শোচনীয় তখন হাসপাতালে নেওয়ার জন্য পাড়া-প্রতিবেশী কাউকেই কাছে পায়নি মাসুদের স্ত্রী। সহযোগিতা না পাওয়ার একটাই কারণ এলাকাবাসীর সন্দেহ মাসুদ করোনা-ভাইরাসে আক্রান্ত। অবশেষে পাড়া-প্রতিবেশীর সহযোগীতা না পাওয়ায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তার। এখানেই শেষ নয়, মাসুদের কবর খননের জন্য গ্রামের কাউকে পাওয়া যায়নি,থানা পুলিশের দুইজন উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক দিয়ে খুড়তে হয়েছে কবর।
শুধু তাই নয় উল্টো দাফন কাজেও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাসহ এলাকাবাসী। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন শিবগঞ্জ-সোনাতলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুুপার কুদরত-ই খুদা (শুভ)। তিনি দুঃখ করে বলেন, একটা লাশ দাফনে এত বাধাঁর বিপত্তির মুখে পড়তে হবে, তা কোনোদিন ভাবিনী। তিনি আরও বলেন উদ্ধর্তন কতৃপক্ষ যখন জানতে পারে যে লাশ দাফন করতে দেওয়া হচ্ছে না, এমন কথা শোনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত দুই প্লাটুন স্পেশাল আর্মড ফোর্স প্রেরণ করে।
কয়েক হাজার লোক একত্রীয় হয়ে দাফন কাজে বাধাঁ সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান তাদেরকে বুঝিয়ে নিজ নিজ বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন। ওই এলাকার কবর খননকারী ব্যক্তিরা কেউই রাজি হচ্ছে না কবর খনন করতে। শিবগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ও এসআই আহসানকে নিয়ে নেমে পড়লাম কবর খুঁড়তে। সব বাধাঁ বিপত্তির পেরিয়ে শনিবার রাত ৮টায় যথাযথ ধর্মীয় নিয়মে লাশের দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এভাবে একজন ব্যক্তির মৃতদেহ পেল সঠিক মর্যাদা। কবর দেওয়া শেষে দূরে দাঁড়িয়ে আমরা সবাই দোয়া পাঠ করলাম
জিএম মিজান / দৈনিক সংবাদপত্র